ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বললেন — যুক্তরাষ্ট্রে মেসেজ পাঠানো হয়েছে বলে প্রচারিত দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা
আয়াতুল্লাহ খামোনেই বলেছেন, ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্র পরিচালনায় থাকা সরকারের সঙ্গে কোনো ঘোষিত বা গোপন বার্তা বা মেসেজ বিনিময় করেনি; সম্প্রতি ছড়ানো “মেসেজ পাঠানো হয়েছে” — এমন দাবিকে তিনি “পুরো মিথ্যা” অভিহিত করেছেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বললেন — যুক্তরাষ্ট্রে মেসেজ পাঠানো হয়েছে বলে প্রচারিত দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা - Ajker Bishshow
নভেম্বর ২৭, ২০২৫ — মধ্যপ্রাণ সংবাদমাধ্যম Mehr News Agency রিপোর্ট দিচ্ছে যে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেই সম্প্রতি এমন সব দাবিকে স্পষ্টভাবে নাকচ করেছেন যেখানে বলা হয়েছিল, ইরান গোপনভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট — Donald J. Trump —‑কে মেসেজ পাঠিয়েছে, এবং সেই মেসেজ Saudi Crown Prince অর্থাৎ সৌদি বাদশাহর যুবরাজ মারফত প্রেরিত হয়েছে।
খামোনেই বলেন, এই ধরনের প্রতিবেদন পুরোটাই ভিত্তিহীন এবং সবিই “sheer lies” — সম্পূর্ণ মিথ্যা।
প্রধান বক্তব্য
কথা শুরুতেই, খামোনেই উল্লেখ করেছেন যে তার ওই ভাষণ মূলত কেন্দ্রীভূত ছিল দেশীয় বাহিনী — Basij Volunteer forces — ও তাদের ভুমিকা নিয়ে। তিনি বাসিজ অসামরিক স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীকে ইরানের সমাজে “এক অপূর্ব, অমূল্য সম্পদ” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তবে এরপর, তিনি একাধিক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়েও ভাষণ দিয়েছেন। সেই প্রসঙ্গে, তিনি একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন — ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্রদের সঙ্গে গোপন বার্তা বিনিময়ে বিশ্বাসী নয়। গত কয়েক দিনে যে গুঞ্জন ছড়ানো হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল যে সৌদি যুবরাজ মারফত ইরান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কোন মেসেজ গেছে — সেই দাবিকে খামোনেই স্পষ্ট ভাবে “মিথ্যা” বলেছেন।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, ইরানের বর্তমান সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে “ব Warmonger” (যুদ্ধ‑প্ররোচক) এবং “উগ্র জায়নবাদী (Zionist) রাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অপরাধমূলক কিছুর অংশ” হিসেবে দেখে। এজন্য, এমন কোনো গোপন বার্তা বিনিময় করার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা ইরানের নেই, এবং দাবি অনুযায়ী মেসেজ প্রেরণ — বিরাট ভুল।
ইরানের গত ১২‑দিনীয় সাম্প্রতিক “আগ্রাসন/যুদ্ধ” সময় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যে মিশ্রিত ছিল, এবং ইরানের প্রতি ছিল — সে সময় ইরান তাদের একতা ও প্রতিরোধ প্রদর্শন করেছে বলে দাবী করেছেন খামোনেই।
উল্লেখ্য, তিনি আরও উল্লেখ করেছেন — বিশ্বব্যাপী দারিদ্র ও নিপীড়িত মানুষের পক্ষে, ও গাজা‑লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলনের জন্য বাসিজ বাহিনী ও ইরান যে “রেসিস্টেন্স ফোর্স” হিসেবে কাজ করছে, সে কারণে — ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা বা গোপন বার্তালাপের দিকে ঝোঁক রাখবে না।
প্রেক্ষাপট এবং বিশ্লেষণ
বর্তমান সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। ইরানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান, গাজা সমস্যাসহ সার্বিক প্রতিরোধ আন্দোলন, এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল মিত্রতার প্রেক্ষিতে, ইরানের এমন কঠোর প্রতিক্রিয়া সমাজ ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্ব বহন করে।
যেখানে কিছু সংবাদমাধ্যম বা অনলাইন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, সৌদি যুবরাজ মাধ্যমে ইরান হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে মেসেজ পাঠিয়েছে — এটি যদি সত্য হতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক, মধ্যপ্রাচ্য নীতি, এবং মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্যের জন্য একটি বড় ইঙ্গিত হত। কিন্তু খামোনেই এই দাবি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন, যা ইরানের নীতি ও অবস্থানের ধারাবাহিকতার প্রতিফলন।
ইরানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন বার্তার পরিবর্তে, তাদের প্রতিরোধ আন্দোলন এবং বাসিজ বাহিনীকে গুরুত্ব দেয়াই আর বেশি প্রাসঙ্গিক। এটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, ইরান এখনো পর্যন্ত “মুখ খুলে কথা বলার” বা “গোপন মেসেজ বিনিময়” ধরণের দিক থেকে দূরে।
আরও একটি বিষয়: খামোনেই-এর ভাষণ শুধু কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে সীমাবদ্ধ ছিল না — তিনি দেশীয় নিরাপত্তা ও সমাজিক সংগঠন তথা বাসিজ বাহিনীর গুরুত্বও তুলে ধরলেন, যা ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত।
সংক্ষেপে, Mehr News Agency–র প্রতিবেদনের আলোকে দেখা যায় — ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামোনেই স্পষ্টভাবে বললেন, “ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন বার্তা পাঠায়নি”। সম্প্রতি ছড়ানো যে “মেসেজ প্রেরণের” খবর, সেটি তিনি অবিলম্বে “sheer lies” — সম্পূর্ণ মিথ্যা — হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন।
এই বিবৃতি শুধুই কূটনৈতিক বা রাজনৈতিক নয় — এটি ইরানের নীতি, বিশ্বাস ও প্রতিরোধ ব্যবস্থার ন্যারেটিভকে আরও স্পষ্টভাবে রূপায়িত করছে। বিশেষ করে বর্তমান যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ আন্দোলন, এবং গাজা-লেবানন প্রেক্ষাপটে, ইরান এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র‑ইসরায়েল বিনিময় বা মেসেজ বিনিময়কে সমর্থন করে না।
এই প্রেক্ষাপটে, এরকম দাবি ছড়ানো ফেক নিউজের আওতায় পড়ে — এবং পাঠক/দর্শকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে তারা সংবেদনশীল বিষয়গুলো যাচাই‑বাছাই করেই গ্রহণ করুন।
Related Posts
View All
ইরানের নতুন HADID-110 কামিকাজি ড্রোন: গতি, স্টেলথ ও নিখুঁত হামলায় বড় অগ্রগতি! | Iran Unveils HADID-110 Kamikaze Cruise Drone: Stealth, Speed & Precision Strike
ইরান তাদের সামরিক শক্তিতে বড় ধরণের পরিবর্তন আনছে। নতুন HADID-110 কামিকাজি ক্রুজ ড্রোনটি শুধু দ্রুতগতির নয়, বরং উন্নত স্টেলথ প্রযুক্তি ও নিখুঁত লক্ষ্যভেদ ক্ষমতা নিয়ে তৈরি। এই ড্রোন আকাশপথে দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করে শত্রুর টার্গেটে সরাসরি ধ্বংসাত্মক আঘাত হানতে সক্ষম।

ইরানে বিশাল সোনার খনি আবিষ্কার: South Khorasan এখন দেশের ‘নতুন স্বর্ণভাণ্ডার | Iran Discovers Massive New Gold Deposit in South Khorasan — A Game-Changer for the Economy
ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় South Khorasan প্রদেশের Shadan খনায় গতকাল এক বিরল, বিশাল মাত্রার সোনার জীবাশ্ম আবিষ্কার হয়েছে। নতুন অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে ৭.৯৫ মিলিয়ন টন অক্সাইড এবং ৫৩.১ মিলিয়ন টন সালফাইড গোল্ড অর — যা Shadan-কে দেশটির অন্যতম প্রধান সোনার ভাণ্ডারে পরিণত করেছে। সরকারের মূল্যায়ন অনুসারে, এই আব

ইরান কীভাবে ইসরায়েলে গুপ্তচর নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করছে – বিশ্লেষণ ও রিপোর্ট
ইরান সামাজিক যোগাযোগ, আর্থিক প্রলোভন, এবং ইসরায়েলি সমাজের সাংস্কৃতিক ও মানসিক দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে গুপ্তচর নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করছে — নতুন তথ্য ও বিশ্লেষণের ভিত্তিতে জানুন কীভাবে।








