বাংলাদেশের বিমানবাহিনী পেল ইউরোফাইটার টাইফুন! চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর সম্পন্ন | Bangladesh Signs LOI to Acquire Eurofighter Typhoon Jets – A New Era Begins
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ইতালির লিওনার্ডোর সঙ্গে ইউরোফাইটার টাইফুন যুদ্ধবিমান কেনার উদ্দেশ্যে LOI স্বাক্ষর করেছে, যা দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।

বাংলাদেশের বিমানবাহিনী পেল ইউরোফাইটার টাইফুন! চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর সম্পন্ন | Bangladesh Signs LOI to Acquire Eurofighter Typhoon Jets – A New Era Begins - Ajker Bishshow
ডিসেম্বর ৯, ২০২৫-এ বাংলাদেশ বিমানবাহিনী (বিএএফ) ইতালির লিওনার্ডো কোম্পানির সঙ্গে ইউরোফাইটার টাইফুন মাল্টি-রোল যুদ্ধবিমান কেনার উদ্দেশ্যে একটি Letter of Intent (LOI) স্বাক্ষর করেছে। এই অনুষ্ঠানটি ঢাকা বিমানবাহিনী সদর দফতরে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিমান সেনাপ্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এবং ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্টোনিও আলেসান্দ্রো।
এই LOI বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নে একটি নতুন দিক নির্দেশ করছে। এটি প্রথম ধাপ মাত্র, যা আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পাদনের আগে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু করবে।
LOI-এর অর্থ কী?
Letter of Intent বা ইচ্ছাপত্র মূলত একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, যা বাংলাদেশকে যুদ্ধবিমান ক্রয়ের বিস্তারিত আলোচনার শুরু হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এতে উল্লেখ আছে যে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে লিওনার্ডোর সঙ্গে আলোচনা চলবে বিমানবিমান, সরঞ্জাম, ডেলিভারি সময়সূচি এবং ফিন্যান্সিং সংক্রান্ত শর্তাবলী নিয়ে।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, স্বাক্ষরের সময় নির্দিষ্ট সংখ্যক বিমান বা ক্রয় খরচ প্রকাশ করা হয়নি। এটি এক প্রাথমিক পদক্ষেপ, যা চূড়ান্ত চুক্তির ভিত্তি তৈরি করবে।
ইউরোফাইটার টাইফুনের গুরুত্ব
ইউরোফাইটার টাইফুন বিশ্বের সর্বাধুনিক মাল্টি-রোল যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা ইতালি, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও স্পেনের মিলিত উদ্যোগে তৈরি। এটি আকাশে শাসন, ভূমি আক্রমণ এবং গোয়েন্দা মিশনে সক্ষম।
প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
- সুপারসনিক গতি, যেখানে Mach 2-এরও বেশি।
- উন্নত রাডার ও সেন্সর, AESA প্রযুক্তি সম্বলিত।
- মাল্টি-রোল ক্ষমতা, বিভিন্ন ধরণের লক্ষ্য নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।
- NATO স্ট্যান্ডার্ড অস্ত্রসামগ্রী এবং সামরিক ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যতা, যা আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ ও যৌথ মহড়ার সুবিধা দেয়।
ইতিহাসে, বাংলাদেশ এই ধরনের আধুনিক যুদ্ধবিমান কখনোই ব্যবহার করেনি। তাই এটি দেশীয় বিমানবাহিনীর জন্য এক বিশাল সক্ষমতার বৃদ্ধির সূচনা হবে।
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পূর্ব প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশের বিমানবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে চীনা ও রাশিয়ান নির্মিত বিমানে নির্ভরশীল ছিল। যেমন: Chengdu F‑7 এবং MiG‑29। এই বিমানগুলো পুরনো হয়ে যাওয়ায় নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
আগের কয়েক বছর ধরে বিমানবাহিনী নতুন যুদ্ধবিমান কেনার জন্য বিভিন্ন বিকল্প বিবেচনা করেছে। Forces Goal 2030 প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই আধুনিকায়ন পরিকল্পনা করা হয়।
কৌশলগত গুরুত্ব
প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বৈচিত্র্য
ইউরোফাইটার কেনার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কৌশলের বৈচিত্র্য নির্দেশ করে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক রেখেছে। পশ্চিমা যুদ্ধবিমান কেনার মাধ্যমে দেশটি তার সরবরাহের উৎস বৈচিত্র্যময় করছে।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বিমান শক্তি
বাংলাদেশের অবস্থান ভারত, মায়ানমার এবং বঙ্গোপসাগর দ্বারা সীমাবদ্ধ। তাই আকাশসীমা রক্ষা এবং সামরিক প্রতিক্রিয়ার জন্য শক্তিশালী বিমান বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোফাইটারের মাল্টি-রোল ক্ষমতা নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।
অর্থনীতি ও শিল্পক্ষেত্র
উচ্চমানের যুদ্ধবিমান কেনার জন্য বৃহৎ বাজেট, প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত অবকাঠামো প্রয়োজন। এটি দেশের প্রতিরক্ষা শিল্প ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানকে নতুন দিক নির্দেশ করবে।
পূর্বের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমা যুদ্ধবিমানের ব্যয় অনেক বেশি। তাই বাংলাদেশকে খরচ ও ক্ষমতার ভারসাম্য ঠিক করতে হবে। (reuters.com)
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মাত্রা
LOI স্বাক্ষর হয়েছে রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময়ে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিমান ক্রয় নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, বিশেষ করে পশ্চিমা এবং চীনা বিকল্প নিয়ে। ইউরোফাইটার কেনা ইতালিয়ান ও ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করবে।
পরবর্তী ধাপ
LOI স্বাক্ষরের পর নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে:
- চূড়ান্ত বিমান সংখ্যা নির্ধারণ
- ডেলিভারি সময়সূচি
- অর্থায়ন এবং ক্রেডিট ব্যবস্থা
- পাইলট ও প্রযুক্তিবিদদের প্রশিক্ষণ
- রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের প্রক্রিয়া
- অস্ত্র ও অ্যাভিয়োনিকস ইন্টিগ্রেশন
এগুলোর সমাধান চূড়ান্ত চুক্তির ভিত্তি তৈরি করবে।
চ্যালেঞ্জসমূহ
মূল্য ও সক্ষমতার ভারসাম্য
ইউরোফাইটার অত্যন্ত সক্ষম হলেও ব্যয় বেশি। তাই বাংলাদেশকে কৌশলগত ও আর্থিক দিক বিবেচনা করতে হবে।
প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামো
পাইলট ও প্রযুক্তিবিদদের প্রশিক্ষণ, নতুন অবকাঠামো এবং লজিস্টিক নেটওয়ার্ক তৈরি করা অপরিহার্য।
ইউরোফাইটার টাইফুনের জন্য LOI স্বাক্ষর বাংলাদেশের বিমানবাহিনী আধুনিকায়নের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তায় নতুন দিগন্ত খুলেছে।
যদি চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়, তবে এটি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জন্য এক বিপ্লবী পরিবর্তন নিয়ে আসবে, যা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী করবে।
Watch Video
Related Posts
View All
লাইফ সাপোর্টে ওসমান হাদি! বাঁচার সম্ভাবনা কতটুকু? নতুন তথ্য বের হচ্ছে | The Truth Behind the Shooting of Osman Hadi—Timeline & Motive
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজধানীর বিজয়নগরে ভয়াবহ হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি। দিবালোকে মাথায় গুলি ছোড়া এই ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। হামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছে, কেন ঘটেছে, কারা জড়িত—সব মিলিয়ে তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

২০২৬ সালের নির্বাচনের ঘোষণা: সিইসি কী বললেন জাতিকে? | Bangladesh 2026 Election & Referendum Dates Announced by CEC
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন জাতির উদ্দেশে বিশেষ ভাষণ দিয়েছেন, যেখানে তিনি ২০২৬ সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তারিখ ঘোষণা, ভোটারদের দায়িত্ববোধে অংশগ্রহণের আহ্বান, এবং নিরাপদ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থাপনার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। এই ভাষণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং আগামীর ন






