২০২৬ সালের নির্বাচনের ঘোষণা: সিইসি কী বললেন জাতিকে? | Bangladesh 2026 Election & Referendum Dates Announced by CEC
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন জাতির উদ্দেশে বিশেষ ভাষণ দিয়েছেন, যেখানে তিনি ২০২৬ সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তারিখ ঘোষণা, ভোটারদের দায়িত্ববোধে অংশগ্রহণের আহ্বান, এবং নিরাপদ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থাপনার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। এই ভাষণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং আগামীর ন

২০২৬ সালের নির্বাচনের ঘোষণা: সিইসি কী বললেন জাতিকে? | Bangladesh 2026 Election & Referendum Dates Announced by CEC - Ajker Bishshow
২০২৫ সালের ১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন জাতির উদ্দেশে একটি বিশেষ ভাষণ প্রদান করেন, যেটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (BTV) ও বাংলাদেশ বেতার‑এ সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। ভাষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়নে গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা এবং ভোটার, রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া‑ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানো।
এই ভাষণটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, কারণ পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটকে কেন্দ্র করে দেশের সকল রাজনৈতিক অঙ্গন এবং সাধারণ নাগরিকদের আগ্রহ উথ্থিত রয়েছে।
ভাষণের মূল বিষয়
১. সূচনা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি
সিইসি তার ভাষণ শুরু করেন জাতির গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ এবং শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কঠিন সংগ্রাম ও ইতিহাসের প্রতি আমাদের সকলের দাঁড়ানো উচিত, এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে।
এমন একটি প্রেক্ষাপটে সিইসি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে দায়িত্বশীলভাবে অংশগ্রহণ আমাদের সকলের কর্তব্য।
২. নির্বাচনের ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা
সিইসি ঘোষণা করেন যে ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ নিয়ে গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণা আজই সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাঠ করা হয়েছে। তিনি বলেন:
“আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ বাংলাদেশে একযোগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।”
এই ঘোষণা দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, কারণ একসাথে নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে জনগণের রাজনৈতিক অংশগ্রহণের সুযোগ আরও বিস্তৃত হবে।
৩. ভোটারদের প্রতি আহ্বান
ভাষণে সিইসি দেশের সকল নাগরিককে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন:
“ভোটদান শুধু নাগরিকের অধিকার নয়, এটি একটি পবিত্র দায়িত্ব। ভোট দিন নির্ভয়ে, সাহসীভাবে, এবং সরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে যেকোনো প্রভাব থেকে উপরে থেকে অংশগ্রহণ করুন।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে সবাই উৎসাহ ও দায়িত্বের সঙ্গে ভোট কার্যক্রমে অংশ নেবে, এবং এ দিনটি একটি উৎসবের মতো উদযাপিত হবে।
৪. নির্বাচন পরিচালনার প্রস্তুতি
সিইসি ভাষণে বলেন যে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই ভোটার তালিকা হালনাগাদ, ধর্মীয় ও সামাজিক সকল মতভেদ বিবেচনায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশেষ করে সফটওয়্যার, রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ, নির্বাচনী আচরণবিধি ইত্যাদি বিষয়ে ইতোমধ্যেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সকল নির্বাচন কর্মকর্তা ও পর্যবেক্ষকদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে যাতে জনগণ নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করে।
৫. নির্বাচনের সময়সূচি ও ধাপসমূহ
সিইসি ভাষণে নির্বাচন কার্যক্রমের মূল সময়সূচি জানিয়ে দেন:
- নির্বাচনের তারিখ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬
- মনোনয়নপত্র দাখিল শেষ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
- মনোনয়নপত্র যাচাই: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ – ৪ জানুয়ারি ২০২৬
- প্রার্থিতা প্রত্যাহার: ২০ জানুয়ারি ২০২৬
- প্রচার শুরু: ২২ জানুয়ারি ২০২৬
- ভোটগ্রহণ সময়: সকাল ৭:৩০ টা থেকে বিকেল ৪:৩০ টা পর্যন্ত
এই সময়সূচি রাজনীতিবিদ, প্রার্থীরা ও সাধারণ ভোটারদের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির জন্য একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রদান করে।
৬. অংশগ্রহণের বার্তা
সিইসি জনগণের প্রতি বার্তা দেন যে নির্বাচন ও গণভোটে অংশগ্রহণ কোনো কিছুর থেকে পিছিয়ে থাকা উচিত নয়। তিনি বলেন:
“ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা শ্রেণী নির্বিশেষে সবাই ভোট দেয়ার মাধ্যমে নিজ নিজ মতামত প্রকাশ করবে এবং জাতীয় সম্মিলিত সিদ্ধান্তে অংশ নেবে।”
এই আহ্বানটি দেশের রাজনৈতিক ঐক্য ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রকে প্রসারিত করার উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে।
৭. নিরাপত্তা ও উৎসবমুখর পরিবেশ
সিইসি বলেন, সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা বাহিনী ও আইন‑শৃঙ্খলা রক্ষা বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ে নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পরিচালনা করা হবে। ভোটারের নিরাপত্তা এবং ভোট কেন্দ্রের নিরাপদ ব্যবস্থাপনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
৮. গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা
ভাষণের একাংশে সিইসি গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক/দেশীয় পর্যবেক্ষকদের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকরা নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অংশ নিলে জনগণের মধ্যে বিশ্বাস আরো দৃঢ় হবে।
তিনি মানানসই তথ্য প্রচার নিশ্চিত করার জন্য সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের স্বাধীন ও ন্যায্যভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
এই ভাষণটি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং ভবিষ্যতের নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্পষ্ট ও প্রামাণিক নির্দেশনা প্রদান করেছে। সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন নাগরিকদের ভোটদানকে দায়িত্ব ও উৎসব উভয়ভাবেই উপস্থাপন করেন, এবং নির্বাচনের সময়সূচি ও ব্যবস্থাপনার সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিয়েছেন।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের নির্বাচন ও গণভোট বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয় হবে। এই নির্বাচন শুধু সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণে সরাসরি ভূমিকা রাখবে।
Related Posts
View All
লাইফ সাপোর্টে ওসমান হাদি! বাঁচার সম্ভাবনা কতটুকু? নতুন তথ্য বের হচ্ছে | The Truth Behind the Shooting of Osman Hadi—Timeline & Motive
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজধানীর বিজয়নগরে ভয়াবহ হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি। দিবালোকে মাথায় গুলি ছোড়া এই ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। হামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছে, কেন ঘটেছে, কারা জড়িত—সব মিলিয়ে তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

বাংলাদেশের বিমানবাহিনী পেল ইউরোফাইটার টাইফুন! চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর সম্পন্ন | Bangladesh Signs LOI to Acquire Eurofighter Typhoon Jets – A New Era Begins
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ইতালির লিওনার্ডোর সঙ্গে ইউরোফাইটার টাইফুন যুদ্ধবিমান কেনার উদ্দেশ্যে LOI স্বাক্ষর করেছে, যা দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।






