বড় পতনের পর Bitcoin দারুণ কামব্যাক—এখন কি ঝুঁকি শেষ? | After Monday’s Crash, Bitcoin Surges Again—Is It Safe Now?
Bitcoin সোমবার বড় ধরণের পতনের পর দ্রুত পুনরুদ্ধার করলেও — আজও বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন। বাজারের তরল-অভাব, উচ্চ-লিভারেজ, বৈশ্বিক মাক্রো অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির কারণে আগামী দিনগুলোতে বড় উৎপাতে বা পুনরাবৃদ্ধিতে সন্দেহ রয়েছে।

বড় পতনের পর Bitcoin দারুণ কামব্যাক—এখন কি ঝুঁকি শেষ? | After Monday’s Crash, Bitcoin Surges Again—Is It Safe Now? - Ajker Bishshow
সোমবার ক্রিপ্টো বাজারে যেন আকস্মিক এক ঝড় নেমে এসেছিল। Bitcoin হঠাৎ করে প্রায় ৮–১০% পর্যন্ত পড়ে যায়। অল্প সময়েই বিলিয়ন ডলারের বেশি লিভারেজড পজিশন লিকুইডেট হয়ে যায়। এই পতনে বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে—Ethereum, Solana, XRP, প্রায় সব বড় কয়েনই বড় ধাক্কা খেয়েছিল।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, মঙ্গলবার সকাল থেকে Bitcoin ধীরে ধীরে দাম ফিরে পেতে শুরু করে। কিছু ঘণ্টার মধ্যেই BTC আবার আগের দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নেয় এবং $৯০,০০০-এর উপরে উঠে যায়।
এই দ্রুত রিকভারি যতটা স্বস্তি আনছে, একই সঙ্গে অনেক বিনিয়োগকারীকে আরও বেশি চিন্তায় ফেলছে—কারণ প্রশ্ন এখন একটাই:
➡️ এটা কি সত্যিকারের ফিরে আসা, নাকি আরও বড় ধাক্কার আগের নীরবতা?
সোমবারের বড় পতন—আসলে কী হয়েছিল?
১. অতিরিক্ত লিভারেজ ট্রেডিং বাজারে ধস নামায়
ক্রিপ্টো মার্কেটে অনেক ট্রেডার লিভারেজ নিয়ে ট্রেড করে থাকে। অর্থাৎ কম পুঁজিতে বড় পজিশন খোলা হয়।
যখন দাম একটু পড়ে, তখনই ওই লিভারেজ পজিশনগুলো লিকুইডেট হয়ে যায়।
সোমবার ঠিক এমনই হয়েছে—
- কয়েক ঘণ্টায় প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার লিকুইডেশন
- বড় অর্ডার একসঙ্গে ক্লোজ হওয়ায় দাম আরও দ্রুত পড়ে
- বাজারে “ডমিনো ইফেক্ট”-এর মতো একটার পর একটা পতন
এটাই সোমবারের বিশাল ক্র্যাশের প্রধান কারণ।
২. তারল্য কমে যাওয়ায় ছোট অর্ডারেও দাম বেশি নড়ছে
বর্তমান ক্রিপ্টো বাজারে একটি বড় সমস্যা হলো—তারল্য কমে যাওয়া।
তারল্য কম থাকলে কী হয়?
- ছোট সেল অর্ডারও দাম নিচে নামিয়ে দেয়
- অস্থিরতা (volatility) বেড়ে যায়
- প্যানিক সেলের চাপ দ্রুত ছড়ায়
এর ফলে Bitcoin-এর দাম খুব অল্প সময়ে অনেকটা পড়ে যায়।
৩. বিশ্ব অর্থনৈতিক অস্থিরতাও বড় ভূমিকা রেখেছে
বিনিয়োগকারীদের মতে, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির টানাপোড়েন পুরো ক্রিপ্টো বাজারকে নড়বড়ে করে দিয়েছে।
- সুদের হার বাড়ার আলোচনা
- ডলারের মূল্য বাড়া
- জাপানের “ইয়েন ক্যারি ট্রেড” ঝুঁকি
- মার্কিন বাজারে অনিশ্চয়তা
এসব মিলিয়ে Bitcoin-এর মতো উচ্চ ঝুঁকির অ্যাসেট চাপের মুখে পড়ে।
ঘুরে দাঁড়াল Bitcoin—কীভাবে?
সোমবারের বড় ধসের পরও Bitcoin খুব দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
কারণ—
১. বিনিয়োগকারীরা “ডিপ বাইং” করেছে
অনেক বড় ফান্ড এবং দীর্ঘমেয়াদি হোল্ডার পতনকে সুযোগ হিসেবে দেখেছে।
দাম কমে যাওয়ায় তারা প্রচুর Bitcoin কিনেছে—এতে বাজারে চাহিদা বেড়ে দাম ফের উপরে ওঠে।
২. ETF বাজার থেকেও কিছু পজিটিভ সিগন্যাল
Bitcoin ETF-গুলোতে নেট আউটফ্লো কমে এসেছে।
এটি বাজারে একটি স্বস্তির বার্তা দিয়েছে যে “বড় বিক্রি” আপাতত থেমেছে।
৩. প্রযুক্তিগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সাপোর্ট ধরে রাখা
$৮৪,০০০–$৮৬,০০০ এর সাপোর্ট লেভেল ভাঙেনি।
এটি ট্রেডারদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে দিয়েছে।
তবুও বিনিয়োগকারীরা কেন চিন্তায়?
Bitcoin যতই রিকভারি করুক, বাজারের ভেতরে কয়েকটি বড় ঝুঁকি এখনও রয়ে গেছে।
১. তারল্য সংকট পুরোপুরি কাটেনি
ক্রিপ্টো বাজারে লেনদেন এখনও আগের মতো প্রবাহিত নয়।
তরলতার অভাব থাকলে বড় পতন যেকোনো সময়ই ফিরে আসতে পারে।
২. লিভারেজ পজিশন উচ্চ মাত্রায় রয়ে গেছে
বাজার আবার উঠতে শুরু করায় অনেক ট্রেডার নতুন করে লিভারেজ নিয়েছে।
এর মানে—
➡️ যারা ভুল দিক বেছে নেবে, তাদের লিকুইডেশন আবার বড় ধাক্কা আনতে পারে।
৩. বৈশ্বিক অর্থনীতি এখনও অস্থিতিশীল
বিশ্ব অর্থনীতির পরিবেশ এখনো ঝুঁকিপূর্ণ:
- মার্কিন শেয়ারবাজারে সংশয়
- সুদের হার কমার সময় নিয়ে বিভ্রান্তি
- রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা
- বৈশ্বিক মুদ্রা বাজারে চাপ
এসবের কারণে Bitcoin-এ বড় র্যালি বা স্থিতিশীলতা এখনো নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
৪. বড় বিনিয়োগকারীদের বিক্রি (Profit Taking) শুরু হতে পারে
যখন দাম আবার $৯০,০০০-এর ওপরে চলে যায়, তখন অনেক প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী লাভ তুলে নিতে পারে।
ফলে আবার বিক্রির চাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বিশ্লেষকদের মত — সামনে কী হতে পারে?
বিশ্লেষকদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও তাদের কিছু সাধারণ ধারণা হলো—
➡️ দৃশ্যপট ১: Bitcoin আবার $৯৫,০০০–$১,০০,০০০ দিকে যেতে পারে
শর্তগুলো হলো:
- বাজারে তারল্য বাড়তে হবে
- ETF ইনফ্লো স্থির হতে হবে
- বড় ফান্ড বিক্রি না করা
➡️ দৃশ্যপট ২: আবারও বড় পতন হতে পারে
- যদি দাম $৮৫,০০০-এর নিচে নামে
- যদি বড় লিকুইডেশন শুরু হয়
- যদি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়
➡️ দৃশ্যপট ৩: সামান্য ওঠানামা চলবে, বড় ক্র্যাশ কিছুদিন নাও হতে পারে
Bitcoin যদিও সোমবারের বড় ধস কাটিয়ে খুব শক্তভাবে ফিরে এসেছে, কিন্তু বাজারের ভেতরের দুর্বলতা এখনো রয়ে গেছে।
তারল্য সংকট, উচ্চ লিভারেজ, বিশ্ব অর্থনীতির চাপ—সব মিলিয়ে বাজারকে এখনও পুরোপুরি নিরাপদ বলা যাচ্ছে না।
বিনিয়োগকারীদের জন্য এখন সবচেয়ে ভালো কৌশল—
- হঠাৎ ওঠানামায় সিদ্ধান্ত না নেওয়া
- অতিরিক্ত লিভারেজ এড়িয়ে চলা
- বিশ্ব অর্থনৈতিক খবর নজরে রাখা
- দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ঠিক রেখে বিনিয়োগ করা
Bitcoin-এর পরবর্তী দিকনির্দেশনা নির্ভর করবে—বাজারে আস্থার ফিরে আসা এবং তারল্য বৃদ্ধির ওপর।
Related Posts
View All
🌍 ৮০০ বিলিয়ন মূল্য! SpaceX নিয়ে বিনিয়োগ জগতে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আলোড়ন! | Elon Musk’s SpaceX Set to Become the World’s Most Valuable Private Company
SpaceX তাদের নতুন insider share sale-এর মাধ্যমে ৮০০ বিলিয়ন ডলারের অভাবনীয় ভ্যালুয়েশনের দিকে এগোচ্ছে। সম্ভাব্য এই মূল্যায়ন বিশ্বের শীর্ষ প্রাইভেট কোম্পানিগুলোকেও পেছনে ফেলবে। বিস্তারিত পড়ুন ajkerbishshow.press-এ।

Bitcoin নিয়ে বড় সতর্কবার্তা: ২০২৫ সালের শেষে দাম কোথায় দাঁড়াবে জানাল ChatGPT | ChatGPT Issues Major Bitcoin Forecast—Here’s Where BTC May End in 2025
ChatGPT জানিয়েছে ২০২৫ সালের শেষে Bitcoin-এর মূল্য ১.৮ লাখ থেকে ২ লাখ ডলারের মধ্যে উঠতে পারে। অনুকূল পরিস্থিতিতে BTC ছুঁতে পারে ২.৫ লাখ ডলারও। ক্রিপ্টো বাজারে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এই সম্ভাবনা।

আমেরিকান বিটকয়েন ৩৯% নেমে গেল! কেন দোষ দিচ্ছেন ট্রাম্প?
আমেরিকান বিটকয়েন কর্পোরেশন (ABTC) এক দিনে প্রায় ৩৯% ধস খেয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা এরিক ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই পতন কোনও দুর্বল ফলাফলের কারণে নয়—বরং বিনিয়োগকারীদের ‘প্রফিট-টেকিং’ বা লাভ তুলে নেওয়ার প্রবণতার জন্যই শেয়ার দামে চাপ পড়েছে। বাজার বিশ্লেষক







