ইসরায়েলি জনমত নেতানিয়াহুর বিচার ছাড়াই ক্ষমা প্রদানের বিপক্ষে: জরিপের ফলাফল . Majority of Israelis Oppose Netanyahu Pardon Without Admission of Guilt: Survey
এক সাম্প্রতিক জরিপে প্রকাশ, ইসরায়েলের জনগণ নেতানিয়াহুর ক্ষমা ছাড়া ক্ষমাপ্রার্থনার বিরোধী। সাধারণ জনগণের বড় অংশ মনে করে, ক্ষমা পেতে হলে দোষ স্বীকার ও জবাবদিহিতা প্রয়োজন।

ইসরায়েলি জনমত নেতানিয়াহুর বিচার ছাড়াই ক্ষমা প্রদানের বিপক্ষে: জরিপের ফলাফল . Majority of Israelis Oppose Netanyahu Pardon Without Admission of Guilt: Survey - Ajker Bishshow
এক সাম্প্রতিক জরিপ জানিয়েছে যে, Benjamin Netanyahu —র বিরুদ্ধে কোনো দোষ স্বীকার ছাড়াই প্রেসিডেন্ট দ্বারা ক্ষমা দেয়ার প্রস্তাবে, ইসরায়েলের বেশিরভাগ মানুষ আপোস করেছে। অর্থাৎ, সাধারণ জনগণের বড় অংশ মেনে নিচ্ছে না যে দোষ স্বীকার ছাড়াই কোনো ক্ষমার আবেদন গ্রহণ করা উচিত। এই তথ্য একটি সময়োপযোগী রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভেদের প্রেক্ষাপটে এসেছে, যেখানে ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা, এবং গণমত-শৃঙ্খলা নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। নিম্নে — জরিপ ফলাফল, রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া, আইনগত ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ, এবং সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ দেওয়া হলো।
জরিপ ও জনমত: কী পাওয়া গেছে
- খবর অনুসারে, জরিপের মাধ্যমে দেখা গেছে যে ইসরায়েলের জনসাধারণের বেশিরভাগই এমন ক্ষমার বিরুদ্ধে যারা দোষ স্বীকার করেনি।
- যদিও নির্দিষ্ট সংখ্যা বা শতাংশ প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে ধার্য করা হয়নি, “বেশিরভাগ” শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে; যা বোঝায় যে এটি একটি সাধারণ-মত, নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে বেশি অংশগ্রহণকারী পক্ষে।
এই ফলাফল বিচার করলে বোঝা যায়, দরপারদের মধ্যে একটা ন্যায্যতা ও জবাবদিহিতা সম্পর্কে গভীর সংশয় রয়েছে — অর্থাৎ, অনেকেই মনে করছেন, ক্ষমা মিলবে যদি বা মাত্র যদি দোষ স্বীকার ও দায় স্বীকার করার কোনো প্রক্রিয়া থাকে।
প্রেক্ষাপট: কেন এই প্রশ্ন এখন?
এই জরিপের ফলাফল এমন প্রেক্ষাপটে এসেছে যখন:
- প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একটি দীর্ঘ চলমান দণ্ডবিধি মামলা রয়েছে, যেখানে তিনটি পৃথক মামলায় — ঘুষ, প্রতারণা এবং দায়িত্বভুল (bribery, fraud, breach of trust) — অভিযোগ রয়েছে।
- ২০২৫ সালের শেষ দিকে, নেতানিয়াহু — প্রেসিডেন্ট Isaac Herzog —র কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা আবেদন (pardon request) করেন, যা, আইনগতভাবে এবং ঐতিহ্যগতভাবে, এখন পর্যন্ত খুব কম নজির রয়েছে — বিশেষ করে এমন প্রার্থনা যেখানে দোষ স্বীকার করা হয়নি।
- এই অনুশোচনাহীন ক্ষমা চাওয়া অনেকেই দেখছেন যেভাবে: “আইন ও ন্যায়বিচার ব্যবস্থার উপরে” — এবং বর্তমান রাজনৈতিক জটিলতা ও গোষ্ঠাগত বিভাজনের প্রেক্ষাপটে, এটি গণতন্ত্র ও আইনশৃঙ্খলার জন্য সংকট তৈরি করতে পারে।
এই কারণেই জরিপে “দোষ স্বীকার ছাড়াই ক্ষমা”-র বিরুদ্ধে সাধারণ জনমতের বিপুল সমর্থন পাওয়া যাওয়া — শুধু এক আইনগত মূহুর্ত নয়, বরং ইসরায়েলের সামাজিক ও রাজনৈতিক ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত এক সংকেত।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
নেতানিয়াহুর ক্ষমা চাওয়ার প্রস্তাবে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে এবং সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে:
- বিরোধীদলীয় নেতা Yair Lapidসহ অ্যান্টি-দোষ স্বীকারের পক্ষে অনেকেই দাবি করছেন যে ক্ষমা পেতে হলে দোষ স্বীকার, দোষ গ্রহণ, ক্ষমা চাওয়া এবং — সম্ভব হলে — রাজনৈতিক জীবনের অবসান প্রয়োজন।
- আইনজ্ঞ ও বিশ্লেষকদের মতে, দোষ স্বীকার না থাকলে এমন ক্ষমা প্রদান “সম্ভব” হলেও — এটি বিরল এবং ঐতিহ্যগতভাবে অস্বাভাবিক। প্রেসিডেন্টের ক্ষমা ক্ষমতা থাকলেও, সাধারণত তা দেওয়া হয় রায় ঘোষণা ও দণ্ড কার্যকর হওয়ার পর। একটি মধ্য-মামলার (pre-conviction) ক্ষমা নতুন ও বিতর্কিত প্রেক্ষাপট তৈরি করবে।
- সমালোচকরা বলছেন, এমন ক্ষমা যদি গৃহীত হয়, তাহলে এটি একটি precedential রূপ তৈরি করবে — যা ভবিষ্যতে অন্য রাজনীতিবিদদের জন্য দায় এড়ানোর পথ খুলে দিতে পারে।
সর্বশেষ পর্যন্ত, এই সিদ্ধান্ত কেবল একজন ব্যক্তি বা দলীয় নেতা সম্পর্কে নয়, বরং পুরো রাজনৈতিক-আইনগত সংস্কৃতি ও জনমতের প্রতি বিশ্বাসের ধারা গঠন করবে।
আইনগত ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ
- আইনগতভাবে, প্রেসিডেন্ট ক্ষমা দিতে পারে — কিন্তু ঐতিহ্যগতভাবে ক্ষমা দেয়া হয় রায় ও দণ্ড নিশ্চিত হওয়ার পরে। মধ্য-মামলায় ক্ষমা দেওয়া হলে, আইনপ্রণেতা ও বিচারক গোষ্ঠীর স্বাধীনতা, ন্যায়ব্যবস্থার স্বচ্ছতা এবং ন্যায়বিচারের প্রতি মানুষের বিশ্বাস ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয় আছে।
- নৈতিকভাবে, দোষ স্বীকার এবং ক্ষমা চাওয়া — দোষ স্বীকারের মধ্য দিয়ে — অনেকের কাছে একটি মুক্তির পথ নয়, বরং দায়-জবাবদিহিতার একটি অংশ। দোষ স্বীকার ছাড়া ক্ষমা দেওয়া হলে, এটি জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার মৌলিক মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন করতে পারে। সমালোচকরা বলছেন, এটি আমাদের ন্যায়িক নৈতিক মানদণ্ডকে দুর্বল করবে।
- পাশাপাশি, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্যও — এক ধরণের “শৃঙ্খলা ও বিশ্বাস” বজায় রাখার জন্য — জনমতকে উপেক্ষা করা যায় না। এই জরিপ দেখিয়েছে, জনগণের একটি বড় অংশ এমন ধরণের ক্ষমা দেয়ার পক্ষে নয় যা ন্যায়িক প্রক্রিয়া ও দায়শীলতা উপেক্ষা করে।
সম্ভাব্য ফলাফল ও প্রভাব
এই মুহূর্তে, ক্ষমা প্রার্থনা এখন বিচার বিভাগে (Ministry of Justice → Presidential Office) পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে। মান্য আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের “প্রি-কনভিকশন” ক্ষমা দেওয়া হলে তা আইন ও ন্যায়বিচারের কাঠামোর জন্য বিপজ্জনক precedent গড়বে।
- যদি ক্ষমা মঞ্জুর হয় — তবে ভবিষ্যতে অন্য রাজনীতিবিদরা দোষ স্বীকার ছাড়াই ক্ষমা চাওয়ার প্রলোভন পেতে পারে। এর ফলে, দলগত ক্ষমতা এবং রাজনীতিতে জবাবদিহিতার অভাব গঠিত হতে পারে।
- অন্যদিকে, যদি ক্ষমা না মঞ্জুর হয় — তাহলে বিচার ব্যবস্থার স্বাতন্ত্র্য ও ন্যায়বিচারের স্বচ্ছতা রক্ষার প্রতি এক শক্তিশালী বার্তা যাবে। এটি আইন ও গণতন্ত্রের মৌলিক গুণাবলীকে মজবুত করবে।
- সর্বোপরি — জনগণের মনমত ও মতামত এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ: এই জরিপ প্রমাণ করে, সাধারণ মানুষ ন্যায় ও দায়বদ্ধতার প্রতি সচেতন এবং তারা এমন ক্ষমা চায় না যা দোষ স্বীকার বা দায়জ্ঞানের বিকল্প হয়ে যায়।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক জরিপ স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে: একটি বড় অংশ মানুষ চান না যে, দোষ স্বীকার ছাড়া ক্ষমা দেওয়া হোক — এমন ক্ষমা যা দায় ও জবাবদিহিতাকে উপেক্ষা করবে। এই জনমত শুধু একজন ব্যক্তির জন্য নয়, পুরো ন্যায়বিচার ব্যবস্থার যথার্থতা, সামাজিক ন্যায়, এবং রাজনৈতিক জবাবদিহিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
যখন রাজনীতিবিদরা ক্ষমা চাওয়া বা পেতে চায়, তখন শুধুই প্রশাসনিক ক্ষমা নয় — তাদের দেয়া উচিত স্বীকার, দায়গ্রহণ এবং সেই সঙ্গে জবাবদিহিতা। না হলে, ক্ষমা বিতর্ক নতুন করে শুধু ব্যক্তিগত নয়, সমাজ ও রাষ্ট্র-স্তরের ন্যায় ও নৈতিকতার প্রশ্নে পরিণত হবে।
এই প্রেক্ষিতে, যদি আমি হয়, আমি বলব — জনমত ও ন্যায়বিচার উভয়েই নির্দেশ দিচ্ছে: ক্ষমা পাওয়া যাবে, কিন্তু জবাবদিহিতা ও দায়দায়িত্বের স্বীকারোক্তির মধ্যে দিয়ে।
Related Posts
View All
রক্তে রাঙা শান্তিরক্ষা মিশন: সুদানে ড্রোন হামলায় ৬ বাংলাদেশি সেনা নিহত | Six Bangladeshi Peacekeepers Killed in Sudan Drone Attack
সুদানের দক্ষিণ কোরদোফান অঞ্চলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। এই হামলাকে ‘হররিফিক’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ও স্বাধীন তদন্তের দাবি।

🔥 চীনের দাবি অস্বীকার, অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ঘোষণা | Arunachal Will Remain Integral Part”: India’s Firm Response After Shanghai Airport Detention
শেনজেন বিমানবন্দরে অরুণাচল প্রদেশের এক ভারতীয় নাগরিক আটক হওয়ার ঘটনা ভারতের কূটনৈতিক আগ্রাসনকে তীব্রভাবে সামনে এনেছে। Ministry of External Affairs স্পষ্ট জানিয়েছে, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এবং চীনের কোনো দাবি বা অসন্তুষ্টি এ বাস্তবতা বদলায় না। ঘটনাটি শুধু ব্যক্তিগত নয়, এটি জাতীয় সার্বভৌম

⚠️ আবার যুদ্ধের আগুন! ট্রাম্প-মধ্যস্থ সমঝোতার পরও থাই–কম্বোডিয়া সংঘর্ষ বেড়েই চলছে | Border War Returns: Thai Airstrikes, Cambodian Artillery Shake Fragile Truce
থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে ফের দফায় দফায় গোলাগুলি ও বিমান হামলায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ট্রাম্প-মধ্যস্থ শান্তিচুক্তির মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই দুই দেশের পুরনো সীমান্ত বিবাদ আবার রক্তাক্ত রূপ নিয়েছে।







