যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ — Hegseth, Signal এবং সেনা ঝুঁকি
Pentagon-এর তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে, সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা ও Fox News হোস্ট পিট হেগসেথ অফিসিয়াল কাজের জন্য Signal অ্যাপ ব্যবহার করে গোপন সামরিক তথ্য আদান–প্রদান করতেন, যা সরাসরি মার্কিন বাহিনীর নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ — Hegseth, Signal এবং সেনা ঝুঁকি - Ajker Bishshow
২০২৫ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত একটি তদন্ত প্রতিবেদনে — যা NPR-র মাধ্যমে প্রথমবার জানা যায় — বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব Pete Hegseth তার ব্যক্তিগত ফোন ও এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ Signal ব্যবহার করে সেনা অভিযানের গোপন সিদ্ধান্ত ও প্রত্যক্ষ পরিকল্পনা শেয়ার করেছিলেন।
এই ব্যবহার — যদিও এনক্রিপ্টেড ছিল — কিন্তু নিরাপত্তা প্রোটোকল ভঙ্গ করেছিল, এবং যদি প্রতিপক্ষ তথ্য উদ্ধার করতো, তাহলে তা U.S. সশস্ত্র সদস্য এবং অভিযানের জীবনবান্ধবতা উভয়ই ঝুঁকিতে ফেলতে পারতো।
এই ঘটনা শুধু একক ভুল নয়, বরং — বিশেষ করে সেনা এবং জাতীয় নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে — একটি বৈপ্লবিক নিরাপত্তা লঙ্ঘনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই নিবন্ধে আমি বিশ্লেষণ করব — কী হয়েছিল, কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিক্রিয়া কী, এবং এর ভবিষ্যৎ প্রভাব কী হতে পারে।
কী হয়েছে: তদন্ত ও ফলাফল
- NPR রিপোর্ট অনুযায়ী, তদন্তকারী body Pentagon Inspector General (IG) — যার নেতৃত্বে রয়েছেন Steven Stebbins — জানায় যে Hegseth তার ব্যক্তিগত ফোন থেকে Signal অ্যাপ ব্যবহার করে দুটি গ্রুপ-চ্যাটে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিমান হামলার পরিকল্পনা শেয়ার করেছিলেন।
- চ্যাটে শেয়ার করা বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল — “টার্গেট, সময়, বিমান, এবং হামলার পরিকল্পনা”। এমন তথ্য ছিল যা যেকোনো প্রতিপক্ষ যদি হ্যাক বা অর্জন করতো, তাহলে সে U.S. ফোর্স এবং অভিযান উভয়কেই ঝুঁকিতে ফেলতে পারতো।
- IG-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, Hegseth–এর ব্যবহার প্রটোকল লঙ্ঘন করেছে: তিনি তার ব্যক্তিগত ফোন ও ব্যক্তিগত অ্যাপ (Signal) ব্যবহার করেছেন সরকারি অফিসিয়াল যোগাযোগের জন্য — যা অনুমোদিত নয়।
- তদন্ত চলাকালীন Hegseth সাক্ষাৎকার দিতে অস্বীকৃতি জানান; তিনি শুধু লিখিত জবাব দিয়েছেন। NPR-কে জানানো হয়, তার যুক্তি ছিল: “যেহেতু তিনি প্রতিরক্ষা সচিব, তাই তিনি তথ্য declassify করার ক্ষমতা রাখেন।” তবে IG স্পষ্ট করে জানায় যে, তদন্তে তারা দেখতে পায়নি যে তথ্য শেয়ার করার আগে declassification নিশ্চিত করা হয়েছিল।
- পেন্টাগনের মুখপাত্র, Sean Parnell, এক বিবৃতিতে বলেছেন যে রিপোর্ট Hegseth–কে “পূর্ণভাবে মুক্তি” দিয়েছে, এবং “কোনো শ্রেণিবদ্ধ তথ্য” শেয়ার হয়নি বলে দাবি করেছে।
গুরুত্ব কেন — OPSEC, নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক বিশ্বাস
এই ঘটনা শুধু একটি “অ্যাপ ব্যবহারের ভুল” নয় — এটি একটি গুরুতর নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ এবং প্রশাসনিক বিশ্বাসের জন্য বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে:
- OPSEC (Operational Security) ভঙ্গ: সেনা অভিযান, বিশেষ করে বিদেশি হামলা বা সেনা গঠন পরিকল্পনায়, তথ্যের গোপনতা অত্যন্ত জটিল এবং প্রয়োজনীয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে ব্যক্তিগত ফোন বা কমার্শিয়াল অ্যাপে শেয়ার করাটা — এমনকি যদি এনক্রিপ্টেডও হয় — নিরাপত্তার একটি বড় ঝুঁকি।
- প্রোটোকল ও ন্যায্যতা লঙ্ঘন: প্রতিরক্ষা বিভাগ (DoD) এর নিজস্ব নিয়ম আছে — সরকারি কাজের জন্য অনুমোদিত নিরাপদ, রেকর্ডকিপিংযোগ্য যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে। ব্যক্তিগত ফোন বা অ্যাপ ব্যবহার মানেই বেসরকারী এবং নিয়ন্ত্রণহীন পন্থা।
- নির্ভরযোগ্যতা ও নেতৃত্বে বিশ্বাসের ঘাটতি: যদি শীর্ষ পদস্থ অফিসারও নিয়ম লঙ্ঘন করেন, তাহলে নিচু স্তরের কর্মকর্তাদের জন্য কী ধরনের বার্তা যায়? এটা প্রতিষ্ঠানের ন্যায্যতা এবং শৃঙ্খলার জন্য বিঘ্ন।
- প্রতিপক্ষের সুযোগ: আজকের ডিজিটাল যুগে, মেসেজিং অ্যাপ—even এনক্রিপ্টেড ones — হ্যাক, তথ্যফিশিং বা নিরাপত্তা হানার লক্ষ্য হতে পারে। যদি শত্রু এমন চ্যাট অ্যাক্সেস পায় — ফলে হামলার সময়, প্ল্যান, টার্গেট এমন সব জ্ঞান যেকোনো ভিকটিম বা প্রতিপক্ষের হাতে পড়তে পারে।
এই সব কারণেই — তদন্তকারী বিভাগ এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা একরূপে মন্তব্য করেছেন: এমন ব্যবহার “নিরাপত্তা ঝুঁকি” এবং “অযোগ্য নেতৃত্বের” প্রতীক।
প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রভাব
- তদন্ত রিপোর্টের খোলস প্রকাশ না হলে — NPR বলেছে, উৎসরা যারা রিপোর্ট দেখেছেন, তারা “অতত জটিলভাবে” তথ্য শেয়ার করেছিল।
- এক উর্ধ্বতন সিনেট সদস্য, Mark Kelly, মন্তব্য করেছেন যে — “স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে, ব্যক্তিগত ফোন ও এমন অননুমোদিত অ্যাপ ব্যবহার করা উচিত ছিল না”। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, প্রতিপক্ষ সহজেই তথ্য পেতে পারত এবং “Houthies-এর মতো” গোষ্ঠীদের হাতে তুলে দিতে পারত।
- অন্যদিকে পেন্টাগন এবং হোয়াইট হাউস দাবি করেছে যে — “কোনো শ্রেণিবদ্ধ তথ্য ফাঁস হয়নি” এবং “অপারেশনাল নিরাপত্তা (OPSEC) ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি” — ফলে তারা হেগসেটকে “দোষমুক্ত” ঘোষণা করেছে।
- কিন্তু নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চ্যাট স্ক্রিনশট ইতোমধ্যেই শক্তিশালী প্রমাণ — আর “exoneration” মানে নয় যে ঝুঁকি ছিল না; বরং নির্দেশ দেয়, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য কঠোর প্রোটোকল দরকার।
প্রেক্ষাপট: কেন এমন ঘটনা ঘটল?
এই কাণ্ডকে এককভাবে দেখা যায় না; বরং এটি বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় নিরাপত্তা, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ব্যক্তিগতভাবে পরিচালনার একটি প্রতিফলন।
- ২০২৫ সালের মার্চে এক সাংবাদিক — যিনি ছিলেন একটি জনপ্রিয় মিডিয়া-এর প্রতিনিধিত্বকারী — ভুলবশত এক গোষ্ঠা-চ্যাটে যুক্ত হয়েছিলেন যেখানে হামলার পরিকল্পনা ও লক্ষ্য শেয়ার করা হচ্ছিল। এই সূচনা থেকেই সব শুরু।
- এর পর থেকে বিষয়টি দুই পার্ট নিয়ে হয় — প্রশাসনিক সুবিধা এবং গতি বনাম শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা। হেগসেট ও তার সহকর্মীরা হয়তো দ্রুত সিদ্ধান্ত এবং যোগাযোগ চেয়েছিলেন, কিন্তু সেই গতি নিরাপত্তা প্রোটোকলকে অগ্রাহ্য করছে।
- আরও উল্লেখযোগ্য — যদিও Hegseth তথ্য শেয়ার করার আগে declassify করার ক্ষমতা রাখতেন, তদন্তে দেখা যায় না যে এমন declassification সত্যিই হয়েছে। ফলে, প্রোটোকলভঙ্গা স্বীকার তো হয়েছে; কিন্তু দায় মুক্তির যুক্তিও পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য নয়।
সম্ভাব্য ফলাফল এবং পরিণতি
এই ঘটনা ভবিষ্যতে নিন্মোক্ত দিকগুলোতে প্রভাব ফেলতে পারে:
- সম্প্রসারিত নিরাপত্তা রিভিউ ও নতুন নীতিমালা — পেন্টাগন সম্ভবত অফিসিয়াল যোগাযোগের জন্য আরও কঠোর নিয়ম আরোপ করবে; হয়তো নির্দিষ্ট, অনুমোদিত অ্যাপ ও প্রটোকল ব্যতীত ব্যক্তিগত ফোন এবং অ্যাপের ব্যবহার সম্পূর্ণ verboten হবে।
- নিবন্ধন ও রেকর্ডকিপিং বাধ্যবাধকতা — অফিসিয়াল বিষয়গুলোর জন্য মেসেজিং বা চ্যাট হলে, তাদের রেকর্ড রাখা যেতে পারে; যাতে পরবর্তী সময়ে রিভিউ বা তদন্ত সহজ হয়।
- নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা — শীর্ষ পদে প্রভাব — এমন ধরনের নিরাপত্তা ব্যর্থতা যদি শীর্ষ স্তরেও ঘটে, তাহলে সেনাবাহিনী বা প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে বিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে; ভবিষ্যতে উচ্চ পদে এমন ব্যক্তিগুলোর দায়িত্ব প্রাপ্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।
- নিয়োগ ও জনমত — সংবাদমাধ্যম, নাগরিক সমাজ, এবং কংগ্রেসীয় সদস্যরা Hegseth–র এমন ব্যবহারের প্রতি তীব্র সমালোচনা চালাচ্ছেন; ভবিষ্যতে রাজনৈতিক চাপ তৈরি হতে পারে।
NPR-র তথ্য এবং তদন্ত রিপোর্ট যে নির্দেশ দিচ্ছে — এটি একটি শুধুমাত্র “অ্যাপ ব্যবহারের” ভুল নয়; এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেনা, নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক বিশ্বাসের মৌলিক কাঠামোর একটি সার্বিক সংকট।
যখন শীর্ষ পদে থাকা ব্যক্তি এমন সিদ্ধান্ত নেন — এবং ব্যক্তিগত, অননুমোদিত চ্যানেল ব্যবহার করে গোপন সামরিক পরিকল্পনা শেয়ার করেন — তখন শুধু প্রোটোকল ভঙ্গ হয় না; এটি একটি নৈতিক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নির্দেশ করে।
এই ঘটনা ভবিষ্যতে শুধু Hegseth বা তার প্রশাসন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি প্রতিরক্ষা বিভাগ, সেনা কমান্ড, এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর_questions about trust, accountability, and the balance between speed and security_ তুলে ধরে।
শুন্য এবং কোমল ভঙ্গুর বিশ্বাসের মধ্যে কাজ করার সময় — যদি নিরাপত্তা চুক্তি এবং নিয়ম লঙ্ঘন করা হয় — তাহলে ফলাফল শুধুই ‘রিপর্ট’ বা ‘মীমাংসা’ নয়; বরং বোঝাপড়া ও পুনর্নির্ধারণ।
Related Posts
View All
রক্তে রাঙা শান্তিরক্ষা মিশন: সুদানে ড্রোন হামলায় ৬ বাংলাদেশি সেনা নিহত | Six Bangladeshi Peacekeepers Killed in Sudan Drone Attack
সুদানের দক্ষিণ কোরদোফান অঞ্চলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। এই হামলাকে ‘হররিফিক’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ও স্বাধীন তদন্তের দাবি।

🔥 চীনের দাবি অস্বীকার, অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ঘোষণা | Arunachal Will Remain Integral Part”: India’s Firm Response After Shanghai Airport Detention
শেনজেন বিমানবন্দরে অরুণাচল প্রদেশের এক ভারতীয় নাগরিক আটক হওয়ার ঘটনা ভারতের কূটনৈতিক আগ্রাসনকে তীব্রভাবে সামনে এনেছে। Ministry of External Affairs স্পষ্ট জানিয়েছে, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এবং চীনের কোনো দাবি বা অসন্তুষ্টি এ বাস্তবতা বদলায় না। ঘটনাটি শুধু ব্যক্তিগত নয়, এটি জাতীয় সার্বভৌম

⚠️ আবার যুদ্ধের আগুন! ট্রাম্প-মধ্যস্থ সমঝোতার পরও থাই–কম্বোডিয়া সংঘর্ষ বেড়েই চলছে | Border War Returns: Thai Airstrikes, Cambodian Artillery Shake Fragile Truce
থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে ফের দফায় দফায় গোলাগুলি ও বিমান হামলায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ট্রাম্প-মধ্যস্থ শান্তিচুক্তির মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই দুই দেশের পুরনো সীমান্ত বিবাদ আবার রক্তাক্ত রূপ নিয়েছে।







