⚠️ আবার যুদ্ধের আগুন! ট্রাম্প-মধ্যস্থ সমঝোতার পরও থাই–কম্বোডিয়া সংঘর্ষ বেড়েই চলছে | Border War Returns: Thai Airstrikes, Cambodian Artillery Shake Fragile Truce
থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে ফের দফায় দফায় গোলাগুলি ও বিমান হামলায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ট্রাম্প-মধ্যস্থ শান্তিচুক্তির মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই দুই দেশের পুরনো সীমান্ত বিবাদ আবার রক্তাক্ত রূপ নিয়েছে।

⚠️ আবার যুদ্ধের আগুন! ট্রাম্প-মধ্যস্থ সমঝোতার পরও থাই–কম্বোডিয়া সংঘর্ষ বেড়েই চলছে | Border War Returns: Thai Airstrikes, Cambodian Artillery Shake Fragile Truce - Ajker Bishshow
দুই দেশের সীমান্তে আবারও যুদ্ধের শব্দ। মাত্র দেড় মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যে শান্তিচুক্তি হয়েছিল, সেটি এখন কার্যত ভেঙে পড়ছে। ভোররাত থেকে সীমান্তজুড়ে গোলাগুলি, আর্টিলারি ফায়ার আর থাই বিমানবাহিনীর বিমান হামলায় পরিস্থিতি দ্রুত উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত, হাজার হাজার পরিবার ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে।
এই সংঘর্ষ শুধু হঠাৎ শুরু হয়নি—এর পেছনে জমে থাকা অভিযোগ, পুরনো সীমান্ত বিবাদ এবং সাম্প্রতিক মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা বড় ভূমিকা রেখেছে। নিচে সহজভাবে পুরো প্রেক্ষাপট, সাম্প্রতিক হামলার বিবরণ, এবং দুই দেশের বক্তব্য তুলে ধরা হলো।
শান্তির প্রতিশ্রুতি কতদিনইবা টিকল?
অক্টোবর মাসে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে। সে সময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়ে উভয় পক্ষকে আলোচনায় বসান।
চুক্তিতে ছিল—
- সীমান্ত থেকে ভারি অস্ত্র সরিয়ে নেওয়া
- মাইন পরিষ্কার করা
- যৌথ পর্যবেক্ষণ দল গঠন
- গ্রেপ্তারকৃত সেনাদের মুক্তি
চুক্তির পর কয়েক সপ্তাহ শান্তি ছিল। সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ হয়, মানুষের মধ্যে স্বস্তির ভাবও দেখা যায়।
কিন্তু ০৮ নভেম্বর সবকিছু পাল্টে যায়। থাইল্যান্ড দাবি করে, তাদের সীমান্ত টহল দলের ওপর একটি নতুন করে পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরিত হয়। এতে দুই সৈন্য আহত হন। থাইল্যান্ডের অভিযোগ—এই মাইন কম্বোডিয়ার সেনারা নতুন করে বসিয়েছে।
কম্বোডিয়া সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ অস্বীকার করে। তারা বলে—মাইন হয়তো পুরনো, কিন্তু নতুন করে তারা কিছু বসায়নি।
তবে ক্ষোভ জমা হওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট ছিল। থাইল্যান্ড ঘোষণা করে তারা চুক্তির কিছু অংশ “স্থগিত করছে”—বিশেষ করে ভারি অস্ত্র সরানোর সিদ্ধান্ত।
সেখান থেকেই আবার উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে।
সোমবারের ঘটনা: দিনের শুরুতেই গোলাগুলি, পরে বিমান হামলা
৮ ডিসেম্বর ভোর। থাই সামরিক বাহিনী জানায়—কম্বোডিয়া প্রথম তাদের সীমান্ত পোস্টে গোলাগুলি চালায়। কম্বোডিয়া বলছে—থাইল্যান্ডই প্রথম আক্রমণ করেছে। ঠিক কোন পক্ষ আগে গুলি ছুড়েছে তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না, তবে দুই পক্ষই মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারি অস্ত্র ব্যবহার শুরু করে।
থাই বিমান হামলা
ভোর ৫টা থেকে থাইল্যান্ড তাদের যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে কম্বোডিয়ার সীমান্তজুড়ে কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়।
থাই সামরিক সূত্র জানায়—
- কম্বোডিয়ার রকেট লঞ্চার
- গোলাবারুদ ডিপো
- সীমান্ত পোস্ট
টার্গেট করে আঘাত করা হয়।
থাই পক্ষ দাবি করছে—এগুলো “আক্রমণ ঠেকানোর জন্য প্রতিরোধমূলক হামলা”।
ক্ষয়ক্ষতি
রিপোর্ট অনুযায়ী—
- এক থাই সেনা নিহত,
- অন্তত ৮ জন আহত,
- কম্বোডিয়ার সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যেও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে (তবে সংখ্যা পরিষ্কার নয়)।
নাগরিকদের ব্যাপক স্থানান্তর
থাইল্যান্ডের চারটি সীমান্ত জেলায় ৩.৮ লাখের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।
কম্বোডিয়ার প্রাহ ভিহিয়ার এবং ওদ্দার মিয়ঞ্চে প্রদেশেও বহু পরিবার বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছে।
কেন আবার যুদ্ধ? সহজ ভাষায় কারণগুলো
এটা শুধু আজকের ঘটনা নয়—কারণগুলো জমে এসেছে বহুদিন ধরে।
১) শত বছরের সীমান্ত বিরোধ
থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়ার সীমান্ত মানচিত্র ফরাসি উপনিবেশ আমলে তৈরি হয়, যা দুই দেশের দাবির সঙ্গে পুরোপুরি মিল নয়। বিশেষ করে প্রাহ ভিহিয়ার মন্দির ও আশপাশের এলাকা নিয়ে পুরনো বিতর্ক রয়েছে।
যখনই রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ে—এই এলাকা যুদ্ধের ময়দানে পরিণত হয়।
২) মাইন বিস্ফোরণ: বিশ্বাস ভেঙে পড়ে
শান্তিচুক্তির মূল ভিত্তি ছিল—দু’পক্ষের পারস্পরিক বিশ্বাস।
কিন্তু মাইন বিস্ফোরণের পর থাইল্যান্ড মনে করে—চুক্তি ভাঙতে কম্বোডিয়া নতুন করে মাইন বসিয়েছে।
কম্বোডিয়া বলছে—এ অভিযোগ মিথ্যা।
এই একটি ঘটনাই দুই দেশের সম্পর্ককে আবার নিচে নামিয়ে দিয়েছে।
৩) রাজনৈতিক চাপ
উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও চাপ রয়েছে। সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়ে তাদের জনগণের কঠোর চাহিদা থাকে। ফলে দুই সরকারই নরম অবস্থান নিতে চায় না।
৪) শান্তিচুক্তিতে অনেক বিষয় অসম্পূর্ণ ছিল
- অস্ত্র সরানো হয়নি
- পর্যবেক্ষক দল কার্যকর হয়নি
- সীমান্ত চিহ্নিতকরণ এগোয়নি
ফলে উত্তেজনা চাইলেই বেড়ে যেতে পারে—এমন পরিবেশ থেকেই গেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম দুই দেশকে “সংযম” বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
আসিয়ান (ASEAN) দেশগুলোও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে এখনো কোনো জরুরি বৈঠকের ঘোষণা আসেনি।
বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে—কারণ এতে মানুষের জীবন, ঘরবাড়ি ও নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ভবিষ্যৎ কি?
সীমান্তে হামলা–প্রতিহামলা চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তবে এখনো আলোচনার দরজা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
সম্ভাব্য সমাধান হতে পারে—
- উভয় দেশ আবার আলোচনায় বসা
- নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক দল নিয়োগ
- সীমান্তে ভারি অস্ত্র প্রত্যাহার
- মাইন অপসারণের যৌথ অভিযান
তবে দুই দেশের আস্থা ফিরিয়ে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ একবার শান্তি ভাঙলে সেটি আবার স্থাপন করা কঠিন হয়ে যায়।
ট্রাম্প-মধ্যস্থ সমঝোতার পর সবাই আশা করেছিল—অবশেষে থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে স্থায়ী শান্তি ফিরবে। কিন্তু মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই শান্তি আবার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।
এখন দেখা যাচ্ছে—
- সীমান্তে গোলাগুলি চলছে,
- মানুষ ঘর ছাড়ছে,
- দুই দেশ একে অপরকে দোষ দিচ্ছে,
- আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন।
এই যুদ্ধের সবচেয়ে বড় মূল্য দিচ্ছে সাধারণ মানুষ—যাদের কোনো দোষ নেই, কিন্তু যারা আজ জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে।
Related Posts
View All
রক্তে রাঙা শান্তিরক্ষা মিশন: সুদানে ড্রোন হামলায় ৬ বাংলাদেশি সেনা নিহত | Six Bangladeshi Peacekeepers Killed in Sudan Drone Attack
সুদানের দক্ষিণ কোরদোফান অঞ্চলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। এই হামলাকে ‘হররিফিক’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ও স্বাধীন তদন্তের দাবি।

🔥 চীনের দাবি অস্বীকার, অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ঘোষণা | Arunachal Will Remain Integral Part”: India’s Firm Response After Shanghai Airport Detention
শেনজেন বিমানবন্দরে অরুণাচল প্রদেশের এক ভারতীয় নাগরিক আটক হওয়ার ঘটনা ভারতের কূটনৈতিক আগ্রাসনকে তীব্রভাবে সামনে এনেছে। Ministry of External Affairs স্পষ্ট জানিয়েছে, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এবং চীনের কোনো দাবি বা অসন্তুষ্টি এ বাস্তবতা বদলায় না। ঘটনাটি শুধু ব্যক্তিগত নয়, এটি জাতীয় সার্বভৌম







